হাওজা নিউজ এজেন্সি: শিশুর প্রতি সম্মান কেবল কথার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় না; বরং বাবা-মা ও অভিভাবকদের ব্যবহারই ধীরে ধীরে শিশুর হৃদয়ে মানবিক মূল্যবোধ গেঁথে দেয়। শিশুদের অন্যকে সম্মান করতে শেখাতে হলে তা অবশ্যই বাস্তব আচরণের মাধ্যমে শেখাতে হবে। শুধুমাত্র নসিহত বা উপদেশ দিয়ে এই গুণ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। কখনোই শিশুর ব্যক্তিত্বকে অবজ্ঞা বা অপমান করে তাকে এমনভাবে গড়ে তোলা যায় না, যাতে সে ভবিষ্যতে অন্যদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।
শিশুকে সম্মান দেখানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো— যখন সে কোনো সমাবেশ বা ঘরে প্রবেশ করে, তখন তার প্রতি দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানানো এবং আন্তরিকভাবে তাকে স্বাগত জানানো। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সাধারণভাবে যেকোনো মানুষ মজলিসে প্রবেশ করলে সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং তাদের জন্য জায়গা করে দিতেন। কিন্তু নিজের সন্তানদের ক্ষেত্রে তিনি এই সম্মানের সঙ্গে আরও গভীর ভালোবাসা যুক্ত করতেন—তিনি শুধু দাঁড়িয়েই থাকতেন না, বরং কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে তাদের স্বাগত জানাতেন।
এক বর্ণনায় এসেছে, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) বসে ছিলেন। সেই সময় ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন। নবীজি (সা.) তাঁদের সম্মানে দাঁড়ালেন, এগিয়ে গিয়ে তাঁদের আন্তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানালেন, তাঁদের কাঁধে তুলে নিলেন এবং স্নেহভরে বললেন: “তোমাদের বাহন কতই না সুন্দর, আর তোমরা কতই না উত্তম আরোহী।”
এই ঘটনাটি প্রমাণ করে, শিশুদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা শুধু একটি পারিবারিক আচরণ নয়; বরং তা একটি গভীর শিক্ষামূলক বার্তা। শিশুরা যা দেখে, সেটিই শেখে। আর নবীজির (সা.) এই ব্যবহার আমাদের শেখায়—সম্মান শেখাতে হলে আগে নিজেকেই সম্মান প্রদর্শনের দৃষ্টান্ত হতে হয়।
সূত্র: সিরাতে তারবিয়াতে পয়গাম্বর ও আহলে বাইত, পৃষ্ঠা ১০৫ ও ১০৭
আপনার কমেন্ট